শিরোনাম

১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:৪৫

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস

ডেইলি বরিশাল সংবাদ সংবাদ সংগ্রহে সারাক্ষন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪ ৪:৩৮ অপরাহ্ণ
Print Friendly and PDF

জনি আলমগীর ,কুয়াকাটা পটুয়াখালী।।শীত মানেই খেজুর রস। নানা ধরনের মুখরোচক পিঠা ও পায়েস তৈরিতে খেজুর রসের বিকল্প নেই। একসময় খেজুর রসে তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েস ছিল দক্ষিণাঞ্চলের সব শ্রেণির মানুষের নবান্নের সেরা খাদ্য সামগ্রী। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েন আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস সংগ্রহকারী গাছিরা।খেজুর গাছিদের এখন আর নেই আগের মত কোন ব্যস্ততা। নেই কোন তাড়া। নেই কে বা কারা খেজুরের রস আগে সংগ্রহ করতে পারে এমন কোন প্রতিযোগিতা। সাগর উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর রস। এক সময়ে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামগঞ্জের মানুষ গাছ ছিলানো (গাছ কাটা) নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। কে কার আগে খেজুর গাছ কেটে প্রকৃতির সেরা উপহারসমূহের মধ্যে অন্যতম খেজুর রস সংগ্রহ করতে পারে এ প্রতিযোগিতায় নেমে পড়তেন।

কালের বিবর্তনে দিন দিন কমে যাচ্ছে খেজুর রস সংগ্রহের পেশা। আগের দিনগুলোতে সাধারণত কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসে প্রতি ঘরে ঘরে দেখা যেত খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ প্রতিযোগিতা কিন্তু বর্তমানে খুব কম দেখা যায় এ পেশার কারিগরদের।উপজেলার ভিবিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইতোমধ্যে কিছুসংখ্যক গাছিয়ারা রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ কাটা শুরু করেছেন। বিশেষ কৌশলে প্রথমে প্রতিটি খেজুর গাছের ডগার একপাশ থেকে ডেগুয়া গোড়া থেকে কেটে ফেলে শুকানো হচ্ছে। এরপর বাঁশ দিয়ে খিল ও চুঙ্গি তৈরি করে গাছ শুকানোর পর তাতে বসিয়ে হাড়ি অথবা প্লাস্টিকের বোতল ঝুলিয়ে দিয়ে রস সংগ্রহ করা হয়। সপ্তাহে পালাক্রমে ৪ দিন রস বের করার পর ৩দিন গাছ শুকানোর পর পুণরায় গাছ কাটা হয়। এভাবে প্রতিটি গাছ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত রস পাওয়া যায়।রস সংগ্রহ করে কোসার ঢেউটিনে বড় আকারের চুলায় জাল দিয়ে তৈরি করা হত খেজুর গুড়, পাটালিগুড়সহ নানা ধরনের গুড়। অপরদিকে ঘরে ঘরে খেজুর রস দিয়ে হরেক রকম মুখরোচক পিঠা পায়েস তৈরির উৎসব দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে আগের মতো এখন আর তেমনটি চোখে পড়ে না।

লতাচাপলী ইউনিয়নের হোসেন পাড়ার গাছিয়া মো. ইউসুফ তালুকনার বলেন, গ্রামে এখন আগের মত খেজুর গাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ছিটেফোঁটা দুই একটা থাকলেও সেই গাছ কাটতে পারছি না। নিজের খেজুর গাছ না থাকায় পরের গাছ কেটে রস বের করতে হচ্ছে। গাছের মালিককে সপ্তাহে তিন দিন রস দিয়ে বাকি চার দিন আমি নিয়ে বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পাই তাতে পরিশ্রমের মূল্য হয় না। মৌসুমি রসের স্বাদ পেতে গাছ কাটা ছাড়তে পারিনি।

কুয়াকাটা পৌর সভার নবীনপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব সেরাজুল হক জানান, নিজের ও অন্যের সবমিলিয়ে এ বছর মোট ২৫টি খেজুর গাছ রস সংগ্রহের জন্য তৈরি করছি। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ২ থেকে ৫ কেজি রস পাব বলে আশা করছি। এতে পরিশ্রম হলেও খুব আনন্দ পাচ্ছি। নিজের চাহিদা পূরণ করে বিক্রি করতে পারব। চাহিদা থাকায় বাড়ি থেকেই ক্রেতারা রস নিয়ে যায়।

পৌরগোজা গ্রামের গাছিয়া মো. ফোরকান ভুইয়া বলেন, প্রতিবছর শীতের শুরুতে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। এ বছর ও শুরু করেছি। বর্তমানে রসে আকাশচুম্বী চাহিদার কারণে বৃদ্ধ বয়সেও এ পুরাতন পেশাকে ধরে রাখার চেষ্টা করছি। তবে অনেকেই এখন আর গাছ কাটে না। তা ছাড়াও দিন দিন খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে।
#####
জনি আলমগীর
মোবাইলঃ০১৭৩৪৭৭৩৫৮০

শেয়ার করুন :

বরিশাল সংবাদ ২৪

বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন।

বরিশাল সংবাদ ২৪

Call

নামাজের সময়সূচি
December 13, 2024
Fajr 5:11 am
Sunrise 6:27 am
Zuhr 11:52 am
Asr 3:37 pm
Maghrib 5:17 pm
Isha 6:33 pm
Dhaka, Bangladesh
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সংবাদ সংগ্রহে সারাক্ষণ