শিরোনাম
নলছিটি প্রতিনিধি \ ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার এক স্কুল শিক্ষক একের পর এক অনিয়ম দুর্নীতি করলেও অদৃশ্য কারনে পাড় পেয়ে যাচ্ছেন। একাধিকবার এই শিক্ষকের অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও এখনও রয়েছেন বহাল তবিয়তে। দেশের সকল পর্যায়ে পালা বদল ঘটলেও আওয়ামী মদদপুষ্ট এই শিক্ষক এখন ভর করেছেন বিএনপি নেতার উপরে। ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়েছেন ওই শিক্ষক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমেই কোমলমতি শিশুদের শিক্ষার হাতে খড়ি শুরু হয়। আর এর কারিগর হলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন। সেই শিক্ষক যদি হয় অনৈতিক ও দূর্নীতিবাজ তবে এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত কোথায় ? উপজেলার ৭০নং পশ্চিম দপদপিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহমিনা খাতুন একের পর এক অনিয়ম দুনীতি করলেও পাড় পেয়ে যান। আওয়ামীলীগ আমলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা গোলাম হোসেন। তিনি সাবেক আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য আমীর হোসেন আমুর অন্ধর মহলের লোক। তার বড় ভাই গোলাম সরোয়ার ইউনিয়ন বিএনপি নেতা হওয়ায় স্কুলের হাল ধরেছেন তিনি। ছোট ভাইয়ের পর বড় ভাইকে ম্যানেজ করেই সকল অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রধান শিক্ষক। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের কয়েক লক্ষ টাকার গাছ কেটে ফের আলোচনায় আসেন তিনি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবত তিনি এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। বিগত আওয়ামী সরকারের এম.পি. আমির হোসেন আমুর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় আওয়ামী পন্থি ম্যানেজিং কমিটি করে একের পর এক সিদ্ধান্ত বাস্তায়ন করে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রধান শিক্ষক ও তার বগলদাবা ম্যানেজিং কমিটির ভয়ে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস পায়নি। কেউ অনিয়মের কথা প্রকাশ করলে সইতে হতো নির্যাতন; ভয়ে কেউ আর মুখ খুলতে সাহস পায়নি। সম্প্রতি স্কুলের জমির উপরে থাকা ১৫-২০টি বৃহদাকৃতির গাছ যার বাজার মূল্য প্রায় সারে ৩ লাখ টাকা তা তিনি টেন্ডারের মাধ্যমে মাত্র ৯৮হাজার টাকায় তার এক নিকট আত্মীয় ইউসুফ আর্মীর কাছে বিক্রি করে দেন। বিদ্যালয়ের একতলা একটি পুরোনো ভবন যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। সেই ভবনটিকেও তিনি পরিত্যাক্ত দেখিয়ে গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মান হওয়ার আগেই প্রধান শিক্ষিকার প্রত্যয়নের মাধ্যমে ঠিকাদার তার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান। যেই প্রাচীর করা হয়েছে তার উপরে লোহার গ্রিল এবং মূল ফটকে লোহার গেট লাগানোর কথা থাকলেও তার কোন দেখা মেলেনি। বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য প্রতিবছর বরাদ্ধকৃত ক্ষুদ্র মেরামত ও ¯িøপ প্রকল্পের টাকা বিগত ১০ বছরে বিদালয়ের কোন কোন কাজে ব্যয় করছেন তার কোন সঠিক তথ্য নাই। স্থানীয় শহীদ খান, চুন্নু মল্লীক, সুমন খান ও হান্নান সরদার সহ স্থানীয়রা জানান, তিনি আওয়ামীলীগের প্রভাব দেখিয়ে সকল অনিয়ম করছেন। কোন বিষয়ে তিনি আওয়ামী নেতাদের ভয় দেখাতেন। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহমিনা খাতুন জানান, বিদ্যালয়ে যা হয়েছে তা নিয়ম মেনেই হয়েছে। আমি আমার ম্যানেজিং কমিটির সহায়তা নিয়েই করেছি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দপদপিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা গোলাম হোসেন জানান, এখন আমি ম্যানেজিং কমিটিতে নাই। আগে স্কুলে যা হয়েছে তা নিয়ম মেনেই হয়েছে। অপরদিকে যুবলীগ নেতার ভাই জাতীয়তাবাদী যুবদলের নেতা গোলাম সরোয়ারকে প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম রুখতে তিনি তাকে আগলে রাখছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমি বিএনপি করি, আমার ভাই আওয়ামীলীগ করেছে তাকে এখন আমি চিনিনা। প্রধান শিক্ষক ভাল মানুষ, মিথ্যা নিউজ করলে কিছুই হবেনা। শিক্ষকের অনিয়মের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিরীন আক্তার জানান, যে অভিযোগ আসছে তা তদন্ত করে সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মো. সাখাওয়াৎ হোসেন সোহাগ
০১৭১৮৩৪০৪০৮
নলছিটি প্রতিনিধি
৩০-১০-২৪