শিরোনাম
রবিউল ইসলাম (রবি):: নানা প্রান্তের বইপ্রেমীদের পদচারণে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেলস পার্ক) জমজমাট হয়ে উঠেছিল ‘বরিশাল বিভাগীয় বইমেলা’ প্রাঙ্গণ। কবি, সাহিত্যিক, প্রকাশক থেকে শুরু করে বইবিষয়ক নানা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত মানুষদের সাত দিনের মিলনমেলা ছিল জৌলুশে ভরপুর। বরিশাল বিভাগীয় প্রশাসনের বাস্তবায়নে গত ৮ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ত এ বইমেলার স্বাদ পেল পাঠকরা। মেলার মাঠে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি যেন উৎসবে পরিণত হয়েছিল। দেখতে এসেছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। এ বই মেলায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি নান্দনিকতায় শ্রেষ্ঠ বই স্টল পুরস্কার অর্জন করেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ স্টলে সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ১ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। তবে সংগঠন ও সরকারী দপ্তর ভিক্তিক স্টলগুলোতে বই বিক্রি হয়নি। অংশ নিয়েছে শুধু বই প্রদর্শনী করেছে। জানা গেছে, ১৯টি সরকারি দপ্তরের স্টলসহ স্বনামধন্য ৩৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘বরিশাল বিভাগীয় বইমেলা’ তে অংশ নিয়েছে। এ সব স্টলগুলো অংশ নিয়েছে তাহল, বরিশাল বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার, বরিশাল বিভাগীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বরিশাল, স্পীকার আ: জব্বার খান স্মৃতি পাবলিক লাইব্রেরী বরিশাল, আনন্দ পাবলিক লাইব্রেরি বরিশাল, ঝিঙেফুল, কবি প্রকাশনী, অনুপ্রাণন প্রকাশনী , মাদার্স পাবলিকেশন, দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লি:, অনন্যা, কিন্ডারবুকস, কোয়ান্টাম, নলেজ মিডিযা পাবলিকেশন্স, আফসার ব্রাদার্স, অন্যপ্রকাশ, এশিয়া পাবলিকেশন্স, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী, তাকধুম, শিলা প্রকাশনী. অনিন্দ্য প্রকাশ, কাকলী প্রকাশনী, গ্রন্থ কুটির, মাতৃভাষা প্রকাশ, নালন্দা, ইমামিয়া চিশতীয়া পাবলিশার, বইবাজার প্রকাশনী, শিরীন পাবলিকেশন্স, বিআইটি পাবলিকেশন্স, বতিঘর, প্রিয়মুখ প্রকাশনী, তাম্রলিপি, অন্যধারা, আহমদ পাবলিশিং হাউস, অন্বয় প্রকাশন, মিডিয়া কর্নার, হাওলাদার প্রকাশনী, কথাপ্রকাশ, গ্রন্তরাজ্য, বাঁধন পালিকেশন্স, সময় প্রকাশন, রুশদা প্রকাশ, বাংলা একাডেমি, ইলান নূর এডিফিকেশন লি:, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, চলচিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, এসএনডিসি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিএমটিএফ লিমিটেড।
এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ নামক স্টলটি। “টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১৭ আগস্ট, ২০২৩ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন।” বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের কার্যক্রম শুরুর অফারটি। যেমন:- প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা। মেলার মাঠে অধিকাংশ সময় স্টলটিতে লোক ছিল না। শুধু সাইন্ডবক্স বাজিয়ে শোনানো হয়েছে। একই অবস্থা ছিল বিভাগীয় প্রশাসন বরিশাল, কন্ট্রোল রুম ও মিডিয়া কর্নার এর স্টল তিনটি নাম মাত্র থাকলেও সব সময় মানুষ শূণ্য ছিল।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয়টি ছিল ‘পুরাতন বই দিয়ে, একটি গাছের চারা নিন’ ব্যতিক্রমী আয়োজনটি করেছে বরিশাল বিডি ক্লিন টিম। অবশ্যই বইটি হতে হবে উপন্যাস, কবিতা ও গল্পের বই। অর্থাৎ পাঠ্য পুস্তক বা সরকারী কোন দপ্তরের বই হলে হবে না। শতাধিক মানুষ বই দিয়ে গাছের চারা নিয়েছে।
কাজী আব্দুর রহমান বলেন, বই মেলায় এসে খুবই ভালো লাগল। তবে স্টল ও বইয়ের সংখ্যা কম। দাম ছিল বেশি। যা ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। তাছাড়া অনেক স্টলে দেখলাম বই সাজানো আছে কিন্ত লোক নেই।
বাবু হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি জানান, আরে ভাই ঢাকা পল্টনের ফুটপাতের রাস্তায় শিশুদের যে সব বই ১০ টাকা করে বিক্রি হয়, একই বই ‘বরিশাল বিভাগীয় বইমেলা’ তে তার দাম ৯০ থেকে ১৫০ টাকা। ক’দিন আগে ঢাকা গিয়ে ১০ টাকা ধরে শিশুদের ২০টি বই ২০০ টাকায় কিনে এনেছি। একই বইয়ের দাম এ মেলায় ৯ থেকে ১৫ গুন বেশি। কিছু বলার নেই।