শিরোনাম
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ধাক্কা সামলে নিয়েছিল পোশাক শিল্প। করোনাভাইরাসের কারণে আরও বড় সংকটে পড়ল দেশের মোট রফতানি আয়ের ৮৪ শতাংশ দখলে থাকা এ খাতটি।
এর মোকাবেলায় মালিক, শ্রমিক, সরকার এবং বিদেশি ক্রেতারা সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত আলোচনা সভায় বৃহস্পতিবার বক্তারা এ কথা বলেন।
অনলাইনের মাধ্যমে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনায় বলা হয়, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৩ থেকে ১৪ শতাংশই গার্মেন্ট খাতের। কিন্তু করোনার প্রভাবে এ খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সাবেক সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন, গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সহসভাপতি আশরাদ জামাল দিপু, শ্রমিক নেতা আমিরুল হক আমিন, নাজমা আক্তার এবং বাবুল আক্তার প্রমুখ।
দেশের গার্মেন্ট খাতে সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি রানা প্লাজার ৭ বছর পূর্তি আজ।
২০১৩ সালের এদিনে সাভারে রানা প্লাজা ভবন ধসে গার্মেন্টের ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক মারা যান। আহত হন কয়েক হাজার শ্রমিক। মূল প্রবন্ধে খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কারখানাগুলোতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি।
রানা প্লাজার ঘটনা বিবেচনায় রেখে দেশের কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের জন্য দুর্যোগকালীন সেবার ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। করোনার কারণে ইউরোপের ব্যবসা চীন থেকে সরে বাংলাদেশে আসতে পারে কিনা’- এ ধরনের এক প্রশ্নের উত্তরে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, করোনা-পরবর্তী বিশ্ববাজারে কী পরিবর্তন হয়, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। ইউরোপের অনেক দেশ করোনার জন্য চীনকে দায়ী করছে। কিন্তু ব্যবসার সম্পর্কটা একটু অন্যরকম।
অনুযোগ, অভিযোগের কারণে ব্যবসার সম্পর্কে খুব একটা প্রভাব ফেলে না। যেখানে বেশি লাভ হবে, ব্যবসায়ীরা সেখানে যাবে। সুতরাং চীন থেকে সরে ব্যবসায়ীরা অন্য কোথাও যাবে বলে আমার মনে হয় না। তার মতে, বর্তমানে রফতানি খাতে যে স্থিতাবস্থা বিরাজ করছে, ভবিষ্যতে তা কাটিয়ে উঠে ব্যবসার সুযোগ ধরে রাখার প্রতি উদ্যোক্তাদের মনোযোগী হতে হবে।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে পোশাক খাতের কার্যাদেশগুলো যেন অন্য দেশগুলোতে চলে না যায়, সেক্ষেত্রে উদ্যোক্তা ও ক্রেতাদের দরকষাকষি অব্যাহত রাখতে হবে। আরশাদ জামাল দীপু বলেন, উদ্যোক্তা ও কারখানার মালিকরা বৈশ্বিক এ মহামারীর ফলে সৃষ্ট সংকট বিশ্লেষণ করছেন।
এ অভিজ্ঞতা সবার জন্যই নতুন। এ পরিস্থিতিতে কারখানা মালিকরা দেশের আইন অনুযায়ী, শ্রমিকদের পর্যাপ্ত সহযোগিতা করবে। আমিরুল হক আমিন বলেন, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করা ও বকেয়া বেতন-বোনাস দ্রুত পরিশোধ করতে হবে।