শিরোনাম
বরিশালে জনসমাগম প্রতিরোধ ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে কঠোর জেলা প্রশাসন ৬৮৫০ টাকা জরিমানা আদায়।করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে গৃহীত প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ এবং এ বিষয়ে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে বরিশাল জেলা প্রশাসনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ৫ এপ্রিল রবিবার সকাল থেকে বরিশাল মহানগরীর চৌমাথা, নতুল্লাবাদ, কাশীপুর, সদর রোড ও ত্রিশ গোডাউন এলাকায় জেলা প্রশাসন বরিশালের পক্ষ থেকে ২ টি মোবাইল কোর্ট টিম অভিযান পরিচালনা করেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অধিক মানুষের সমাগম করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা পালনের পাশাপাশি গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে। জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব এস, এম, অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল মোঃ জিয়াউর রহমান এবং মোঃ সাইফুল ইসলাম। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি এ সময় বিভিন্ন টি-স্টল, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করা হয় এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি সবাইকে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয় এবং এ আদেশ অমান্যাকরীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেয় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল মোঃ জিয়াউর রহমান। অভিযান পরিচালনাকালে সোনালী ব্যাংক চৌমাথা শাখা ও রূপালী ব্যাংক সদর রোড শাখাসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকে গ্রাহকদের লম্বা লাইনে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থানের বিষয়টি সামনে থেকে তদারকি করা হয় এবং এ দূরত্ব বজায় রেখে গ্রাহকসেবা দেওয়ার জন্য ব্যাংক ম্যানেজারদের অনুরোধ করা হয়। এছাড়া গাদাগাদি করে সামাজিক দূরত্ব না মেনে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল যোগে বরিশাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী পরিবহনের দায়ে মনির হোসেন (২৮) ও মোঃ রিয়াজ (২৩) নামের দুইজন মোটরসাইকেল চালককে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় মোট ৩৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় আরো কয়েকটি পরিবহনকে সতর্ক করা হয়। নগরীর সদর রোডের মোহনা ডিপার্টমেন্ট স্টোর শাটার অর্ধ খোলা রেখে ভেতরে ১৫-২০ জন গাদাগাদি করে জনসমাগম করে পণ্য বিক্রির অপরাধে সংক্রামক রোগ (নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৪ ধারায় মোহনা ডিপার্টমেন্ট স্টোর কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে দোকান চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন প্রান্তের টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমে সামাজিক দূরত্ব মেনে লাইনে দাঁডিয়ে পণ্য বিক্রয় ও ক্রয় করার জন্য অনুরোধ করা হয়। অভিযানে প্রসিকিউসন অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন বরিশাল সদর উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক ও সেনেটারি অফিসার মোঃ জাকির হোসেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। অপরদিকে বরিশাল মহানগরীর বাংলাবাজার, আমতলা মোড়, সাগরদী, রুপাতলি হাউজিং এবং রুপাতলি বাস স্ট্যান্ড এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম। অভিযানকালে সাগরদি পিটিআই সংলগ্ন সড়কে তিনজন যাত্রী বহনকারী তিনটি মোটরসাইকেল আটক করা হয়। সামাজিক দূরত্ব বিষয়ক নির্দেশনা অমান্য করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরীর অপরাধে দন্ডবিধির ২৬৯ ধারা মোতাবেক তিনটি মোটরসাইকেল চালককে ৫০০ টাকা করে মোট ১,৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। তাছাড়া কর্তব্যরত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় কয়েকটি স্পটে টিসিবি কর্তৃক ন্যায্যদামে পন্য বিক্রয় এবং খাদ্য অধিদপ্তরের ১০টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি কার্যক্রম তদারকি এবং ক্রেতাদের নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে লাইনে দাঁড়ানো নিশ্চিত করা হয়। অভিযানে আইনানুগ সহযোগিতা প্রদান করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় বলেন, জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষায় জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমান সদা সচেষ্ট এবং তাঁর নির্দেশনায় নিয়মিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।