শিরোনাম
এম এম ইসলাম জাহিদঃ
করোনা ভাইরাসের মহামারির সংক্রমন ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মানুষ-জনকে বাড়িঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি সারা বাংলাদেশ তথা বরিশাল জেলার সব জায়গায় লকডাউন করা হয়েছে। কিন্তু বরিশাল সদর উপজেলার অনেক বাস স্টান্ড, পাড়া-মহল্লা এবং হাঁট-বাজারগুলোতে মানুষে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বসছে সাপ্তাহিক হাট-বাজার। এছাড়াও বিকেল হলেই গ্রামীন হাট বাজারে বাড়ছে জন-সমাগম (মানুষের ভীড়)। যেখানে বজায় থাকছেনা সামাজিক দূরত্ব। ফলে বর্তমান সরকারের করোনার বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় জেলার অধিকাংশ উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে গঠিত করোনা বিস্তার রোধের কমিটি অকার্যকর হয়ে আছে এমন অভিযোগ সচেতন মহলের। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় গতো শুক্রুবার সদর উপজেলার সাহেবেরহাটে বসেছে জমজমাট সাপ্তাহিক হাট। যেখানে শতো শতো মানুষের সমাগম দেখা গেছে। বন্দর থানা পুলিশের কড়া হুশিয়ারি, বাজার মনিটরিং এবং বার-বার মাইকিং করে সচেতন করা-কে কোনো ভাবেই মানছেনা তারা(জন-সাধারন)। দেখাগেছে, লাহারহাট, সাহেবেরহাট, চন্দ্রমোহন, টুমচর, চরমোনাই’র বিশ্বাসের হাট, রাজারচর, নোমর হাট, বুখাইনগর, চরকাউয়া, দুর্গাপুর, তালুকদারহাট, মৌলভিরহাটসহ প্রায় সব বাজারগুলোতেই বিকেল-সন্ধা পর্যন্ত অনেক দোকানেই গোপনে চা বিক্রি করে যেখানে মানুষের সমাগম দেখা যায়। এদিকে সুশিল সমাজের অনেকেই বলেন, বরিশালের পূর্বপাড় চরকাউয়ায় প্রকাশ্যেই চা বিক্রি করছেন অনেক দোকানদার। যেখানে লোকজনের ব্যাপক সমাগম ছিলো এমনকি বসেছে জমজমাট মাছের হাট। অনেক জায়গায় খাদ্যপন্য উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান (বেকারি) এমনকি ইট ভাটার মালিক’রাও তাদের ভাটার কার্যক্রম চালু রেখেছেন। প্রতিনিয়তই প্রায় অর্ধ-শতাধিক শ্রমিক ভাটায় জড়ো হয়ে ট্রলার কিংবা ট্রলিতে ইট লোড-আনলোড করছেন। গোপন সুুুুত্র বলছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, প্রভাবশালি মহল, বাজার কমিটি এমনকি বিভিন্ন নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রিত হাঁট-বাজারগুলো চালু থাকায় করোনায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দুরের কথা সরকারের মহৎ উদ্যোগকে ভেস্তে নিতে বসেছে। অপরদিকে জেলায় লকডাউন চলমান থাকায় থেমে গেছে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনের চাকা। নিত্য দিনের মতো শ্রম বিক্রী করতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে খেটে খাওয়া মানুষেরা রান্নার চুলা জ্বালাতে যখন হিমশিম খাচ্ছে। ঠিক তখনই চাল, ডাল, তেল, আলু, লবন, পেঁয়াজ, সাবান সম্মিলিত প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তার ঘোষনা এসব মানুষের জীবনে নতুন আলোর সঞ্চার করেছে। খেটে খাওয়া মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটিয়েছে। সরকারের এ খাদ্য সহায়তা অপ্রতুল হলেও ক্ষুধার্ত মানুষ গুলোর আক্ষেপ নেই। এদিকে মানুষের বাড়ী বাড়ী খাদ্য সহায়তার প্যাকেজ নিয়ে ক্ষুধার্ত মানুষগুলোকে দাড় করিয়ে এক শ্রেনীর ফটোশেসনকারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতার পক্ষে ত্রান বিতরনের প্রচার চালাচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠনের নামে যৎসামান্য খাদ্য সহায়তা নিয়ে প্রচারনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এক শেনীর মানুষ। ফেসবুক খুললেই ক্ষুধার্ত মানুষদের সাথে নেতার অনুসারীদের ছবি দেখা যাচ্ছে। একটি খাদ্য প্যাকেজ বিতরন করতে দেখা যাচ্ছে ১০-১৫ জন ক্যামেরার সামনে দারাচ্ছে। ইচ্ছের বিরুদ্ধে অপ্রতুল খাদ্য সহায়তা নিয়ে ফটোশেসনকারীদের দৌরাত্ম নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করেছেন এসব খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বলেন, সাধারন মানুুুুষকে সচেতন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। উপজেলার সব জায়গায় গিয়ে জনসমাগম বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করার নির্দেশনায় মাইকিং করানো অব্যাহত আছে।