শিরোনাম

৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:৫৬

শ্রমজীবীদের পাশে দাঁড়ানোর সময় এখন

ডেইলি বরিশাল সংবাদ সংবাদ সংগ্রহে সারাক্ষন

প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২০ ৭:১২ অপরাহ্ণ
Print Friendly and PDF

চীন, ইরান ও ইতালি থেকে করোনাভাইরাস যেন আছড়ে পড়েছে পৃথিবীর সব দেশে। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর থেকে প্রতিদিন প্রতিমূহূর্তে করোনা-আক্রান্ত রোগী ও সংক্রমিত এলাকা বাড়তে বাড়তে গোটা পৃথিবীকেই গ্রাস করে বসেছে।

মৃত্যু যেন ‘মিছিলে’ পরিণত হয়েছে। অন্যান্য দেশে এর ব্যাপকতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মধ্যে তখন থেকেই একটু একটু করে শঙ্কা বাড়তে থাকে। অনলাইনের এ যুগে অন্যদেশের ভয়াবহ পরিস্থিতিগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠেছে, মানুষ নিজের করণীয় ঠিক করতে দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের এ সময় সাধারণ সর্দি-কাশি ও জ্বরেই মনের মধ্যে ভয় এসে ভর করছে।

পৃথিবীর সামর্থ্যবান ও উন্নত দেশগুলো এর লাগাম টেনে ধরতে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক দেশ তাদের পুরো টেরিটোরিকেই লকডাউন করে ফেলেছে। আমাদেরও বলতে গেলে একই অবস্থা। ফেরিওয়ালার মনোহারি দ্রব্যাদি বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে, ফুটপাতের দোকানগুলো ক্রেতাশূন্য হয়ে গেছে। রিকশাওয়ালা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক, টেম্পো-বাস ড্রাইভার, হেলপার, দিনমজুর কর্মহীন হয়ে গেছে, বাসাবাড়ির খণ্ডকালীন গৃহকর্মীদের ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে।

শ্যামলী সিনেমা হলের মোড়ে দিনতিনেক আগে সন্ধ্যায় এক রিকশাওয়ালাকে গামছা দিয়ে চোখ মুছতে দেখে জিজ্ঞেস করায় বললেন, সারা দিনে ১০০ টাকাই কামাই হয়নি। শ্রমজীবী, মুটে-মজুর এবং এ ধরনের ব্যাপক জনগোষ্ঠী যারা দিন আনে দিন খায়, তারা যদি একটি দিন ঘর থেকে বের হতে না পারে, তাহলে জীবননির্বাহ করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। অনেককেই ফ্যাল-ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে। ওদের কথা- ‘করোনা হলেই যে মরে যাব, তা হয়তো নয়; কিন্তু যদি কাজ না থাকে, তাহলে তো না খেয়েই মরতে হবে।’

কাজ না থাকায় অনেক উবার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টেম্পোচালক, হেলপার গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। এসব মানুষ যে যেখানে আছেন, সেখানেই আমরা যদি তাদের অন্নের সংস্থান করতে পারি, তাহলে এ রোগের বিস্তার কম হবে। আমাদের ধর্মপ্রাণ মানুষের এ ব্যাপারে করণীয় আছে।

আমরা অনেকেই ইতোমধ্যে জেনে গেছি, এ সংক্রান্ত আমাদের প্রিয় নবীর (সা.) নির্দেশনাটি। তিনি বলেছেন, কোথাও মহামারী দেখা দিলে এর মাত্রা, ব্যাপ্তি ও পরিধি কমিয়ে আনতে কেউ যেন সে এলাকা থেকে অন্যত্র না যায় এবং নতুন করে কেউ যেন উপদ্রুত এলাকায় প্রবেশ না করে। অর্থাৎ শুধু মুটে-মজুর নয়, সমগ্র জাতিকে এ মরণব্যাধি থেকে রক্ষা করতে তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা সবার জন্য ফরজ হয়ে গেছে।

আমাদের খেটে খাওয়া মানুষের বেশির ভাগই দিনমজুর, রিকশাচালক, পোশাককর্মী, গৃহকর্মী ও খুচরা বিক্রেতা। ঢাকা শহরের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ৩ হাজার ২৯৪টি বস্তিতে এদের বসবাস, সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ। ঢাকা ও আশপাশে রিকশার সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ। একটি রিকশা সাধারণত দুই শিফটে চালানো হয়, সেক্ষেত্রে রিকশাচালকের সংখ্যা কমবেশি ২২ লাখ; একই সঙ্গে রিকশা মেরামত, যন্ত্রাংশ বিক্রেতা এবং এ ধরনের আরও কিছু লোক জোগানদাতা হিসেবে এ কাজের সঙ্গে জড়িত।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার রাইটস নামে একটি শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠানের জরিপ মতে, ঢাকার ৯৪ শতাংশ রিকশাচালকই অসুস্থ; জ্বর, সর্দি, কাশি, গায়ে ব্যথা ও দুর্বলতা লেগেই থাকে। এদের আবার ৩০ শতাংশ জণ্ডিসে আক্রান্ত। রিকশাচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা শহরে ওদের প্রতিদিনের আয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুই হল এ ধরনের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দু’বেলা অন্নের সংস্থানের উদ্যোগ গ্রহণ।

এ দুঃসময়ে বিভিন্ন দেশেই ঘরবন্দি মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়ানো হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী মানুষকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছেন সবার ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানোর; বেতন-ভাতা নিয়ে চিন্তা না করতে। ভারতের পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তার রাজ্যে সবার জন্য ৬ মাসের চাল বিনামূল্যে সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশের শ্রমজীবী মানুষের ভরণপোষণের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।

দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দু’বেলা খাওয়ার নিশ্চয়তা প্রদানে সরকারি সব পদক্ষেপের সঙ্গে আমরা যারা সামর্থ্যবান ব্যক্তি আছি, তাদেরও দায়বদ্ধতা আছে। আমাদেরও তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে, পাশে দাঁড়াতে হবে, অভয় দিতে হবে। এ সমাজে অনেক হৃদয়বান ব্যক্তি আছেন; আল্লাহ তাদের যেমন সামর্থ্য দিয়েছেন, ঠিক তেমনি অন্যকে সাহায্য-সহযোগিতা করা, কষ্ট লাঘবে এগিয়ে আসার মন-মানসিকতাও দিয়েছেন।

আমার কিছু সামর্থ্যবান পরিচিতজনরা বলছিলেন- তারা তো নিরুপায় হয়ে যাওয়া মানুষের সাহায্যের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু তাদের কীভাবে সাহায্য করবেন, সরাসরি টাকা, না খাদ্যসামগ্রী কিনে দেবেন বা সার্বিক ব্যবস্থাপনার বিষয়টি কীভাবে হবে- এ বিষয়গুলোর কারণেই ইচ্ছা ও আগ্রহের বাস্তবায়নটি হোঁচট খাচ্ছে। স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষার্থী বলেছে- আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে রিকশাচালকদের চাল-ডাল, নুন-তে

শেয়ার করুন :

বরিশাল সংবাদ ২৪

বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন।

বরিশাল সংবাদ ২৪

Call

নামাজের সময়সূচি
November 4, 2024
Fajr 4:48 am
Sunrise 6:01 am
Zuhr 11:41 am
Asr 3:42 pm
Maghrib 5:21 pm
Isha 6:35 pm
Dhaka, Bangladesh
November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  

সংবাদ সংগ্রহে সারাক্ষণ