শিরোনাম
করোনাভাইরাসের থাবায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত ইউরোপের দুই দেশ ইতালি ও স্পেন। এ ভাইরাস প্রতিরোধের লড়াইয়ে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ জার্মানি।
দক্ষিণ কোরিয়ার কৌশল অনুসরণ করে সাফল্য পাচ্ছে দেশটি। ট্রেস, টেস্ট এবং ট্রিট (শনাক্ত, পরীক্ষা এবং চিকিৎসা)-এই ‘তিন টি ‘ কৌশলে সফল হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। জার্মানিও সেগুলো অনুসরণ করছে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশটি ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে।
সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে দেশটি কোয়ারেন্টিনের পুরো প্রক্রিয়াই সঠিকভাবে পালন করছে বলে জানিয়েছে এএফপি।
জার্মানির কর্মকর্তারা বলছেন, জার্মানি অন্য যে কোনো ইউরোপীয় দেশের তুলনায় বেশি পরিমাণ করোনাভাইরাস পরীক্ষা চালাচ্ছে। তারা বলেন, দেশটি সপ্তাহে ৩ থেকে ৫ লাখ মানুষের করোনা পরীক্ষা করছে। কয়েকটি জার্মান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি অনুসারে, চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সরকার লক্ষ্য স্থির করেছে যে একদিনে কমপক্ষে ২ লাখ পরীক্ষা করা হবে। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহ হলেই তাদের সবার পরীক্ষা করা হবে বলে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ রোগের একটি উপসর্গও যার মধ্যে রয়েছে তাকে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এই লড়াইয়ের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হল কোনো রোগীর সাম্প্রতিক চলাফেরা শনাক্ত করতে স্মার্টফোনে লোকেশন ডেটা ব্যবহার করা। সম্ভাব্য সংক্রমিত লোকদের আরও সঠিকভাবে অনুসন্ধান করা এবং পৃথক করা। সরকারি কর্মকর্তারা এবং মহামারী বিশেষজ্ঞরা সেলফোন ট্র্যাকিংয়ের পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে এটি একটি বিতর্কিত ধারণা। জার্মানির প্রস্তাবিত পরিকল্পনা হল-ট্রেস, টেস্ট এবং ট্রিট।
এই ‘তিন টি’ কৌশল দক্ষিণ কোরিয়াকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করেছিল বলে মনে করা হয়। এতে সম্ভাব্য আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ব্যাপক স্ক্রিনিং এবং রোগীদের নিরীক্ষণের জন্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জার্মানির রবার্ট কোচ ইন্সটিটিউটের (আরকেআই) প্রধান লোথার উইলার দৈনিক ফ্রাঙ্কফুর্টার অলজামেইনকে বলেন, যদিও জার্মানি এবং দক্ষিণ কোরিয়া দুটি আলাদা দেশ। তবে এশিয়ান দেশটির ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের কৌশল উদাহরণ হতে পারে। তিনি বলেন, মূল বিষয় হল সেলফোন ডেটা ট্রেস করা।
জার্মানিতে ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে মৃতের হার মাত্র দশমিক ৭ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে ১০ শতাংশ এবং স্পেনে ৮ শতাংশ। দেশ দুটির তুলনায় জার্মানিতে মৃত্যু হার অনেক কম। জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনস স্পান সতর্ক করেছেন, সামনের সপ্তাহগুলোতে দেশটিতে নতুন করে করোনা আক্রান্তের ‘সুনামি’ হতে পারে।