শিরোনাম

১২ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:৪৮

ছিন্নমূল মানুষের পাশে ঢাবির শিক্ষার্থীরা

ডেইলি বরিশাল সংবাদ সংবাদ সংগ্রহে সারাক্ষন

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২০ ৪:৪৪ অপরাহ্ণ
Print Friendly and PDF

শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ‘পায়রা চত্বর’। চিরচেনা লোকে লোকারণ্য টিএসসিতে নীরবতা। চায়ের দোকান ঘিরে গল্প-আড্ডা নেই, নেই শিক্ষার্থীদের কোলাহল। এরই মধ্যে দেখা গেল একদল শিক্ষার্থীকে।

চাল, ডাল ও আলুর বস্তা এবং ডিম নিয়ে জড়ো হচ্ছেন তারা। কাঠের জ্বালানী ও দু’টি রান্নার পাতিল নিয়ে এসেছেন কয়েকজন। বসানো হলো লোহার কাঠামো দিয়ে তৈরি অস্থায়ী চুলা। বিকেল পাঁচটা থেকে শুরু হলো পাঁচশ ছিন্নমূল মানুষের জন্য খিচুড়ি রান্না। রাতে রিকশায় চড়ে অনাহারী মানুষের দোড়গোড়ায় যেয়ে যেয়ে বিতরণ করা হলো সেসব খাবার।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রাজধানী ঢাকা যখন কার্যত লকডাউন, তখন ছিন্নমূল মানুষের জন্য এই উদ্যোগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য তানভীর হাসান সৈকতের।

শনিবার পঞ্চম দিনের ন্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় শ্রমজীবী ও ‘দিন এনে দিন খাওয়া’ মানুষের মাঝে বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতায় খাবার বিতরণ করেছেন তিনি।

দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে যখন বিত্তবানরা কর্মহীন ও অসহায় মানুষের মুখে দু’বেলা খাবার তুলে দিতে পারছেন না, তখন এসব মানুষের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন সৈকত ও তার সহযোগীরা। তাই তো মলিন বদনে চেয়ে থাকা অভূক্ত মানুষগুলোর যেন অপেক্ষা- ‘ওরা কখন আসবে!’।

সকালে ঘুম থেকে ওঠে সৈকতের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ দলটি বের হয়ে যায় বাজারের উদ্দেশ্যে। প্রতিদিনের খাবার তৈরির পাশাপাশি ১০০ পরিবারের জন্য ক্রয় করেন চাল, আলু ও পেঁয়াজ।

দুপুরের মধ্যে সেগুলো ছোট ছোট পলিথিনে করে একেকদিন একেক স্থানে বিতরণ করেন। ঘোষণা দিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে নয়, বরং দুস্থ মানুষদের খুঁজে খুঁজে অতি প্রয়োজনীয় এসব পণ্য বিতরণ করছেন তারা। পরে বিকালে শুরু হয় রান্নার কাজ। নিজেদের চাঁদার টাকা, বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের দেয়া অর্থেই চলছে এ উদ্যোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ব্যপক আলোচিত হওয়ায় অনেকে আবার মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমেও পাঠাচ্ছেন অর্থ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তানভীর হাসান সৈকত যুগান্তরকে বলেন, যখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায় এবং হলগুলো খালি করার নির্দেশনা আসে তখন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এ অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কারণ এই এলাকায় প্রচুর ছিন্নমূল মানুষকে দেখতে পাই যাদের সারা দিনেও পেটে কোনো দানাপানি পড়েনি। তখন খুব খারাপ লাগে। এরপর সিদ্ধান্ত নেই তাদেরকে রান্না করে খাওয়াব। কিন্তু শঙ্কাও কাজ করছিল। কারণ তখন হাতে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তবুও নিজের কাছে থাকা ৬ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করি রান্নার কাজ। বন্ধু, বড় ভাই, ছোট ভাই ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলি।

তারাও সাড়া দেন। প্রথম দিন ৫০ জনের জন্য রান্না দিয়ে শুরু করি। এরপর পর্যায়ক্রমে ১০০ এবং শুক্রবার পর্যন্ত ২০০ মানুষের রান্না করি। শনিবার থেকে তা বাড়িয়ে ৫০০ জনের করা হয়েছে।

থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স বিভাগের এ শিক্ষার্থী আরও জানান, আমরা সামর্থ অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। প্রতি রাতের জন্য ডিম-খিচুড়ি দিলেও অন্য দুই বেলা আমরা তাদেরকে ‘সাপোর্ট’ করতে পারছি না। তখন স্বল্প পরিসরে চাল, আলু ও পিয়াজ বিতরণের সিদ্ধান্ত নেই। এরপর থেকে দৈনিক ১০০ পরিবারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যগুলো দেয়া হচ্ছে। শনিবার ধানমন্ডি এলাকায় গিয়ে সত্যিকারের অভাবী মানুষ খুঁজে খুঁজে আমরা এই পণ্যগুলো দিয়েছি।

ডাকসুর এই নেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। এরপর শাহবাগ, হাতিরপুল, গুলিস্তান, আজিমপুর, ধানমণ্ডিসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে যাচ্ছি।

আর রান্নার কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার রিকশাওয়ালা, কর্মহীন চটপটি, ফুচকা ও চায়ের দোকানদারেরা। তাদেরকেও সাধ্য অনুযায়ী সম্মানি দিচ্ছি। এতে করে তাদের পরিবারগুলো খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকার সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চাঁদা তুলে দু’টি পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) কেনা হয়েছে। যাতে একদম মাঠ পর্যায়ে যারা খাবারটা বিতরণ করছি, তারা সংক্রমিত না হই।

এই উদ্যোগে ব্যপক সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে এই শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বলেন, শুরুতে একটু ভয়ই পাচ্ছিলাম। কারণ যে পরিমাণ টাকার দরকার ছিল- তা কীভাবে আসবে সেটা বুঝতে পারছিলাম না। তখন বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলি। তারা একশ’, পাঁচশ’ ও এক হাজারসহ বিভিন্ন অঙ্কের অর্থ দিয়েছেন। সবচেয়ে অবাক হয়েছি টিএসসি’র কর্মচারী যারা আছেন, তারাও এ উদ্যোগের কথা শুনে এগিয়ে এসেছেন। পঞ্চাশ টাকা, একশ’ টাকা করে চাঁদা তুলে দিয়েছেন। এরপর অনেক শিক্ষকরাও সহযোগিতা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্যোগের বিষয়টি জেনে অনেকে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করেছেন।

খাবার বিতরণ করতে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সৈকত বলেন, যখন সারাদিনের না খেয়ে থাকা মানুষগুলোর মুখে সামান্য কিছু

শেয়ার করুন :

বরিশাল সংবাদ ২৪

বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন।

বরিশাল সংবাদ ২৪

Call

নামাজের সময়সূচি
June 12, 2025
Fajr 3:43 am
Sunrise 5:06 am
Zuhr 11:58 am
Asr 4:38 pm
Maghrib 6:49 pm
Isha 8:13 pm
Dhaka, Bangladesh
June 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

সংবাদ সংগ্রহে সারাক্ষণ