শিরোনাম
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্ব থমকে গেছে। রক্ষা পায়নি বাংলাদেশও। ফলে নানা গুজব, আশঙ্কা, খবর, সমালোচনায় সামাজিক মাধ্যমে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন ভাইরাসের চেয়েও বেশি পেয়ে বসেছে আমাদের সমাজকে। এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে সকল দেশ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সকলের একটিই কথা বড় করণীয় ‘বাসায় থাকুন, সংক্রমণ কমান।’
দেশ থমকে গেলেও থমকে যায়নি ফেসবুকভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গ্রুপ এস,এস,সি ২০০৫ এইচ,এস,সি ২০০৭ এর ৪৬০০০ হাজার বন্ধুরা তারা ছড়িয়ে আছে পুরো বিশ্বে। উই ফর আস (We For Us) এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জরুরী অবস্থায় তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ডাব্লিও,এইচ,ও এবং সরকারের বাসায় থাকার আদেশের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে অনলাইনে যোগাযোগ করে অল্প কিছু স্বেচ্ছাসেবকের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে মাত্র ১ দিনে নিজেদের মধ্যে থেকে অর্থ জোগাড় করে প্রস্তুত করেছে ৫০০০ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার। আর এ পুরো কাজের তত্ত্বাবধানে ছিলেন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মাসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সোহেল বিন আজাদ।
অসহায় হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। পর্যাপ্ত উপকরণের অভাবে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে চিকিৎসা ও আইন প্রয়োগকারী।
এসব স্যানিটাইজার বিনামূল্যে পৌঁছে দেয়া হবে ঢাকার ৫টি অঞ্চলে ও বিভাগীয় শহরগুলোতে। স্যানিটাইজার প্রস্তুত করার পুরো প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষভাবে পরিচালনা করছে গ্রুপের বাবলু, বিজয়, মুশফিক, কামরুল, খান, খাইরুল, ইমাম, শিপু, রিজন, রিমন, সাইফুল, মুন্না, জিন্নাত, মো. রুমান অমি সেন প্রমুখ। সমন্বয়ক হিসেবে রয়েছে তুষার ভদ্র, আবিদ, আফজাল রোমান, মেহেদি, জিসান, মাহমুদুল, যোসেফা ও নিগার অপু। এ ব্যাপারে সোহেল বলেন ‘আমাদের গ্রুপের সদস্য রয়েছে পৃথিবীর প্রায় ২০০টি শহরে। আমাদের প্রধান ইচ্ছা দেশের এ পরিস্থিতিতে আমরা গ্রুপের মাধ্যমে আমাদের সাধ্য অনুযায়ী আমাদের বন্ধু ও দেশের কল্যানে কাজ করব। সে লক্ষ্যে প্রথম ধাপে আমরা মাস্ক, স্যানিটাইজার ও পিপিই প্রস্তুত করছি যা পৌঁছে যাবে যারা করোনায় সহায়তা দিতে কাজ করছে সেই সকল মানুষগুলোর কাছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার আমরা চিকিৎসক, নার্স, মাঠে নিয়োজিত সংবাদ কর্মী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে পৌঁছে দেব। ইতোমধ্যে মতিঝিল থানা, কাফরুল থানা, তেজগাঁও, কিছু এতিম খানা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী (সমশের নগর স্টেশন) ও কাওরানবাজারে আমরা কিছু বিতরণ করেছি।
এছাড়া এর পরেই আমরা সকলের সহায়তায় বিনামূল্যে পিপিই পৌঁছে দিতে চাই হাসপাতালে কর্মরত যোদ্ধাদের হাতে। প্রায় ১০০০ পিপিই ও ২০০০০ মাস্ক তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। তাছাড়াও ছিন্নমূল মানুষদের নিরাপদে থাকার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে সঙ্গে রেখে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করছি।’
সে লক্ষে প্রায় ১৫টি জেনারেল হাসপাতাল ও মাঠ পর্যায়ে গিয়ে গিয়ে পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানান তুষার ভদ্র। এ আয়োজনের সকল খরচ মাত্র কয়েকজন মেম্বার স্বতঃস্ফূর্তভাবে বহন করছে।
এ সবকিছুই গ্রুপের কেন্দ্রীয় প্রোগ্রাম। “করোনা ইমার্জেন্সি রেসপন্স প্রোগ্রাম ০৫০৭ (সি,ই,আর,পি-০৫০৭)” এর অধীনে চালু রয়েছে। এ প্রোগ্রামের আওতায় গ্রুপের বন্ধু ও বন্ধুদের পরিবারের জন্য গ্রুপেরই ডাক্তার/নার্সদের সহায়তায় রয়েছে ইমার্জেন্সি মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্স প্রোগ্রাম যা হটলাইন ও প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে সাহায্য করতে প্রস্তুত গ্রুপে আক্রান্ত পরিবারকে। তাছাড়া রয়েছে লকডাউন ও কোয়ারেন্টাইন অ্যাসিস্টেন্স প্রোগ্রাম এবং খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা।
ঢাকার ৭ টি স্থানে ও বিভাগীয় পর্যায়ে থাকবে সিইআরপি সেন্টার যেখান থেকে এই পুরো কার্যক্রম পরিচালিত হবে, প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হবে ও চিকিৎসকের সাহায্যে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হবে।