শিরোনাম
চট্টগ্রামে প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টনে থাকা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে বাসায় বাসায় উপহারস্বরূপ ফল পৌঁছে দেয়ার কর্মসূচী নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। সোমবার (২৩ মার্চ) দুপুর থেকে নগরীর ১৬টি থানায় একযোগে শুরু হয় প্রবাসীদের বাসায় ফল পৌঁছে দেয়া।
সকালেই সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমানের নির্দেশ দেন হোম কোয়ারেন্টনে থাকা প্রতিটি প্রবাসীর বাসায় ফলের ডালি পৌঁছে দিতে। দুপুরেই থানাগুলোতে শুরু হয় ফল উপহারের প্রস্তুতি। এভাবেই নগরীর ১৬ থানা থেকে ফলের ডালা সাজিয়ে পৌঁছে দেয়া হয়েছে হোম কোয়ারেন্টনে থাকা প্রবাসীদের বাসায়। এক্ষেত্রে নিরাপদ দূরত্বে উপহার পৌঁছে দিতে পুলিশ সদস্যদেরকেও দেয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা।
সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুবর রহমান বলেন, আমরা কোয়ারেন্টনে থাকা প্রবাসীদের মধ্যে কোনো রকম আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাই না। আমরা চাই তারা যথাযথ কোয়ারেন্টাইন নিয়ম মেনে চলুক। আর যাতে তারা মনোবল না হারায় সে জন্য আমরা বিশেষ এই উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নগরীর প্রতিটি থানার প্রবাসীরা এর আওতায় থাকবেন।
সিএমপি দক্ষিণ জোনের উপ কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে প্রতিটি জোনের উপ কমিশনাররা এই ফল উপহারের কর্মসূচী তদারকি করছে।
দুপুরে নগরীর কোতোয়ালী থানায় গিয়ে দেখা গেছে, কার্টুনে করে কমলা এবং মাল্টা এনে প্যাকেট করা হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকটা ব্যস্ত সময় পার করছেন থানার অফিসার ইনচার্জসহ অন্যান্য সদস্যরা। কোন কোনো পুলিশ সদস্য যেমন সুন্দর-সাজানো ডালিতে ফল সাজাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ সাজানো ডালি নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন প্রবাসীদের বাসায়।
এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসিন বলেন, সাধারণ কোনো বাসায় পুলিশ গেলে অন্যান্যরা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। এ নিয়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুল বুঝাবুঝিও হয়। আর এখন যেহেতু করোনা ভাইরাস আতঙ্ক। পুলিশ সদস্যরা সাধারণভাবে তাদের খবর নিতে গেলে আতঙ্ক সৃষ্টি হবে। তারা মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হবে। তাই ভিন্ন পন্থায় আমরা তাদের কাছে ফলের ডালি পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি খবর নিচ্ছি।
বিকেলে মধ্যে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৫শ প্রবাসীর বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে পুলিশের এই বিশেষ উপহার।
তবে পুলিশের দাবী, উপহার হিসেবে ফলের ডালি দেয়ার মাধ্যমে দু’টি বিষয় নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রথমত তাদের মনোবল চাঙ্গা রাখা, দ্বিতীয়ত প্রবাসীরা হোম কোয়ারেন্টন মানছে কি না তা তদারকি করা।
সিএমপি দক্ষিণ জোনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানান, সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনেই পুলিশ সদস্যরা প্রবাসীদের বাসায় যাচ্ছে। তারা সরাসরি প্রবাসীদের হাতে এই উপহার তুলে দেবে না। প্রথমে পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা উপকরণ ব্যবহার করে ওই বাসায় ঢুকবে। এরপর হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে নিরাপদ হয়ে স্বজনদের কাছে উপহার পৌঁছে দেবেন। সে সাথে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে আসবেন। এভাবেই হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাসীরা পুলিশের নজরের মধ্যে থাকবেন। চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় দেড় হাজারের বেশি প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।