শিরোনাম
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। এরইমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ জন আর মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। এই পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে করোনা নিয়ে সতর্কবার্তা দিলেন সাকিব আল হাসান।
পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করতে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে গেছেন সাকিব। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেই হোটেল রুমে নিজেকে আইসোলেশনে রেখেছেন তিনি। সেখান থেকেই এক ভিডিও বার্তায় এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনা ভাইরাসকে মহামারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। আপনারা জানেন যে বাংলাদেশেও বেশ কয়েকজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। আমাদের এখনই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আমাদের সতর্কতাই পারে আমাদের দেশ এবং আমাদেরকে সুস্থ রাখতে।’
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কিছু পদক্ষেপ বাতলে সাকিব, ‘কিছু সাধারণ পদক্ষেপ অনুসরণ করলেই আমার ধারণা আমরা এই রোগ থেকে আমরা মুক্ত থাকতে পারব এবং আমাদের দেশকেও মুক্ত রাখতে পারব। যেমন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় সঠিক শিষ্ঠাচার মেনে চলা এবং যদি কেউ বিদেশ ফেরত থাকেন তাহলে অবশ্যই নিজেকে ঘরে রাখা এবং ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা। আরেকটা বিষয় মনে রাখতে হবে যেন আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীরা যেন আপনার সঙ্গে দেখা না করতে পারে। ১৪ দিন আপনাকে ঘরে থাকতে হবে। এটা খুবই জরুরি।’
যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েও আইসোলেশনে থাকায় এখনও পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়নি সাকিবের। করোনা সতর্কতার কারণে নিজেকে দূরে রেখেছেন। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, ‘আমার নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। আমি মাত্রই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে পৌঁছলাম। যদিও প্লেনে কিছুটা ভয়ে ছিলাম। তবু চেষ্টা করেছি কীভাবে নিজেকে পরিষ্কার রাখা যায় এবং জীবাণুমুক্ত রাখা যায়। এরপর যখন আমি যুক্তরাষ্ট্রে এসে নামলাম আমি সোজা একটি হোটেলের রুমে উঠেছি।’
‘আমি হোটেলের লোকজনকে অবগত করেছি যে আমি এখানে থাকব কিছুদিন এবং আমি যেহেতু প্লেনে করে এসেছি আমার একটু হলেও ঝুঁকি আছে, এজন্য আমি নিজেকে আইসোলেটেড করে রেখেছি। যে কারণে আমি আমার বাচ্চার সঙ্গেও দেখা করিনি। এখানে এসেও বাচ্চার সঙ্গে দেখা না করা অবশ্যই আমার জন্য কষ্টদায়ক, তারপরও আমার মনে হয় এই সামান্য ছাড় দিতে পারলে আমরা অনেকদূর এগোতে পারব,’ বলেন তিনি।
বিদেশফেরতদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনে প্রতি জোর দেন সাকিব, ‘আমাদের দেশে যারা বিদেশফেরত এসেছেন, আমাদের দেশে আসলে অনেক মানুষই এসেছেন সংবাদপত্রে দেখেছি, আমাদের দেশের মানুষ তারা। যেহেতু তাদের হাতে কম ছুটি থাকে তাই তারা অনেক সময় চায় আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে এবং ঘুরাফেরা করতে, খাওয়া-দাওয়া করতে, আড্ডা দিতে চায় কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে একত্রিত হতে চায়।’
‘যেহেতু আমাদের সময়টা অনুকূলে না, তাই আমি সবাইকে অনুরোধ করব সবাই যেন এই নিয়মগুলো মেনে চলেন। কারণ আমাদের ছোট ছোট এসব সেক্রিফায়িসগুলো আমাদের পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে, সুস্থ রাখতে। আশা করি আপনারা আমার এই কথাগুলো শুনবেন কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যেসব দিকনির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো সম্পর্কেও একটু অবগত হবেন এবং সেভাবে ব্যবস্থা নেবেন,’ যোগ করেন তিনি।
করোনা ভাইরাস নিয়ে সবার মধ্যেই একপ্রকার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এই সময় আতঙ্কিত না হয়ে সঠিক কাজগুলো করার তাগিদ দিয়ে সাবেক অধিনায়ক বলেন, একটা কথা বলতে চাই, কেউ প্যানিক হবেন না। প্যানিক হওয়া আমার মতে ভালো কোনো ফল বয়ে আনবে না। আমরা সংবাদমাধ্যমগুলোতে দেখি যে অনেকে তিন, চার কিংবা ছয় মাসের জন্যও খাবার সংগ্রহ করছে। আমার ধারণা খাবারের ঘাটতি কখনোই হবে না, ইনশাল্লাহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কেউ না খেয়ে মারা যাব না। তাই আমরা প্যানিক হবো না। কিছু সঠিক সিদ্ধান্তই আমাদের এই বিপদ থেকে মুক্ত করতে আর সেটা সকলের সম্মলিত প্রচেষ্টায় সম্ভব। আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি, খুব প্রয়োজন ছাড়া এই সময় ভ্রমণ কিংবা ঘরের বাইরে বের হবেন না। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, নিজের যত্ন নেবেন এবং পরিবারের খেয়াল রাখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।’